বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। আর এই ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ। প্রত্যেক আসরেই কে হবে চ্যাম্পিয়ন- এই নিয়ে ফুটবল প্রেমীদের মধ্যে থাকে টানটান উত্তেজনা। শুধু আমেরিকা, ইউরোপ কিংবা আফ্রিকা নয় বরং ফুটবল বিশ্বকাপের উত্তেজনা সারা বিশ্বের সাথে সাথে ছড়িয়ে যায় আমাদের দেশেও। এবারের ফুটবল বিশ্বকাপ ২০১৪ অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে।
আমার আজকের টিউনটিতে (“ফুটবল বিশ্ব কাপ ২০১৪ এর ফিক্সার - ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা“) ফুটবল বিশ্বকাপ ২০১৪ ভিবিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেস্টা করব। আমার এইটি একটি ধারাবাহিক টিউন, এই ধাপে আমি আলোচনা করব সাপোর্টার, ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা, স্বাগতিক ব্রাজিলের কাছে প্রত্যাশা এবং খেলাসমূহের সময়সূচি এবং অন্নান্য বিষয় নিয়ে।
আমার এই ধারাবাহিক টিউনটির প্রথম পর্ব “টেকনোলোজি আর বিশ্বয়ে ভরপুর ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ ২০১৪!" এ আমি আলোচনা করেছিলাম “ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ ২০১৪”-এ যে সকল টেকনোলোজির ছুঁয়া থাকছে তা নিয়ে। এই যেমন ভ্যানিশিং স্প্রে, গোল-লাইন প্রজুক্তি সহ ইত্যাদি এবং দ্বিতীয় ধাপে "টেকনোলোজি নির্ভর ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ ২০১৪ -এ অংশগ্রহনকারী দল এবং বর্তমান র্যাংক" টিউনটিতে আলোচনা করেছিলাম প্রথমে মাঠ এবং শহর সম্পর্কে এবং দ্বিতীয়তে এবারের ফুটবল বিশ্বকাপে অংশগ্রহনকারী দল এবং তাদের বর্তমান র্যাংক। আশা করি আজকের পর্বটা ভাল লাগবে। তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলঃ
বাংলাদেশে কিংবা বিশ্ব জুড়ে সম্ভবত ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনারই সাপোর্টার বেশী। আর্জেন্টাইন সাপোর্টারদের স্বপ্ন মেসি ভাল কিছু করবে এই ফুটবল বিশ্বকাপে এবং তাদের জন্য সুখের খবরও হচ্ছে মেসি ভালই ফর্মে আছে। অপর্দিকে এবারের বিশ্বকাপ যেহুতু ব্রাজিলে হচ্ছে তাই ব্রাজিলের জন্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বিশেষ সুযোগ থাকছে অর্থাৎ নিজেদের মাঠ নিজেদের, দেশের সাপোর্ট সাথে থাকছে পরিবার এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা! তবে সাথে সাপোর্টদের বার্তি চাপও থাকছে ব্রাজিলের ঘাড়ে। আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল এই দুই দল বাদেও ভাল সাপোর্টার রয়েছে ইতালি, জার্মানি, ইংল্যান্ড, স্পেন এবং ফ্রান্সের। আমি জার্মানির সাপোর্ট করি তারপরও আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের খেলা ভালই উপভোগ করি! তবে নিজের দলের আরও কিছু মানুষ পেলে ভালই হত।
ব্রাজিল বনাম আর্জেনটিনা মুখোমুখিঃ
এই দিক থেকে ব্রাজিল আর্জেন্টিনা থেকে এগিয়ে আছে। ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার দেখা হয়েছে মোট ৯৮ ম্যাচে। ব্রাজিল জিতেছে ৩৯ ম্যাচে এবং ৩৫ ম্যাচে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। অপরদিকে ২৪ ম্যাচই অমীমাংসিত ছিল। আর এই ৯৮ ম্যাচে ব্রাজিল গোল করেছিল মোট ১৫২ এবং অপরদিকে আর্জেনটিনা করেছিল ১৫০টা।
স্বাগতিক ব্রাজিলের কাছে প্রত্যাশাঃ
স্বাগতিক ব্রাজিলের সকলেরই থাকছে ভালই প্রত্যাশা। বিশেষ করে ব্রাজিলান সাপোর্টার তো মনে করছেন এবারে ইতিহাস আরেকটা ঘটে যাবে। কিন্তু র্যাংক এর দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে স্বাগতিক ব্রাজিল আর্জেন্টিনা কিংবা অন্নান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে। তবে নিজের মাঠে খেলার সুযোগ এবার পুরোপুরি ভাবেই ভোগ করতে যাচ্ছে স্বাগতিক ব্রাজিল।
তবে অতিতের স্বাগতিক দের ইতিহাস থেকে দেখা যায় ফুটবলে স্বাগতিকরা খুব বেশী সুবিধা করতে পারে না। ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক উরুগুয়ে। এবং দ্বিতীয় বিশ্বকাপও ১৯৩৪ সালেও এই একই ঘটনা ঘটিয়ে বসে স্বাগতিক দেশ ইতালি। এর পরই ঘটনা চলতে থাকে ভিন্ন খাতে। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ১৭টি বিশ্বকাপের মধ্যে মাত্র ৬ বার কাপ জিতেছে স্বাগতিকরা। আর বাকি ১১ বারই কিন্তু অন্য দেশ কাপ নিয়ে গেছে স্বাগতিকদের দেশ থেকে। যে ছয়টি দেশে
স্বাগতিক হিসাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তারা হলোঃ ১৯৩০-এ উরুগুয়ে, ১৯৩৪-এ ইতালি, ১৯৬৬-তে ইংল্যান্ড, ১৯৭৪-এ পশ্চিম জার্মানি, ১৯৭৮-এ আর্জেন্টিনা এবং ১৯৯৮-তে ফ্রান্স।
স্বাগতিক হিসাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তারা হলোঃ ১৯৩০-এ উরুগুয়ে, ১৯৩৪-এ ইতালি, ১৯৬৬-তে ইংল্যান্ড, ১৯৭৪-এ পশ্চিম জার্মানি, ১৯৭৮-এ আর্জেন্টিনা এবং ১৯৯৮-তে ফ্রান্স।
প্রতিবারের মত এবারও আমরা ফুটবল প্রেমীরা চাই ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনার খেলা দেখতে। কিন্তু হতাশার কথা হলেও সত্য হয়ত এবারও দুজনের দেখা হচ্ছে না ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর ফুটবল বিশ্বকাপ ২০১৪-এ!
ফুটবল বিশ্ব কাপ ২০১৪ এর ফিক্সারঃ
আজ এটুকুই, আশা করি খুব দ্রুতই আবার দেখা হবে, ফুটবল বিশ্বকাপ ২০১৪-এর পরবর্তি টিউনে। পরবর্তি টিউনে আলোচনা করব পুরুস্কার এবং বিশ্বকাপের ইতিহাস নিয়ে। এবং সব শেষের পর্বে আলোচনা করব এবারের বিশ্বকাপের মূল আকর্শন এবং কোন প্লেয়ারদের উপর থাকবে সবার নজর! আশা করি সে পর্যন্ত সকলেই ভাল থাকবেন এবং এবারের বিশ্বকাপে কাকে সাপোর্ট করছেন জানাতে ভুলবেন না! ধন্যবাদ সকলকে!
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন